BANK FOCUS WRITING

ভাষা আন্দোলন

ভাষা আন্দোলন রচনাটি ব্যাংক ফোকাস রাইটিং এর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সালে ব্যাংকসহ নানা চাকুরির পরিক্ষায়  ভাষা আন্দোলন বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন এসেছে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন লেখাটি আশা করি ব্যাংকে চাকুরির পরিক্ষার্থীদের কাজে আসবে।

ভাষা আন্দোলন

 

ভাষা আন্দোলন

১৯৪৭ সালে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ‘পাকিস্থানের ভাষা সমস্যা’ শিরোনামে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান।

১৯৪৮ সালের ২৪শে মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষার দাবি অগ্রাহ্য করে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন। উপস্থিত ছাত্ররা তীব্র প্রতিবাদে ‘না না’ ধ্বনি দিয়ে ওঠে।১৯৪৮ সালের ১৮ই নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকায় এসে বক্তৃতাকালে আবার উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন। ছাত্ররা ‘না না’ বলে প্রতিবাদ করে ওঠে।লিয়াকত আলী খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে নতুন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।এই প্রতিবাদে ভাষা আন্দোলন নতুন করে শুরু হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ৩০ জানুয়ারি সভা ও ছাত্র ধর্মঘটের আহ্বান করে।৩১শে জানুয়ারি আওয়ামী মুসলিম লীগ সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সর্বদলীয় সভায় ‘সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়।এ সভায় ২১শে ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতাল, জনসভা ও বিক্ষোভ মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।এ সময় হঠাৎ করে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমিন ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল নিষিদ্ধ করেন।সরকারি এ ঘোষণা পাওয়া মাত্রই ঢাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্ররা কিছুতেই ১৪৪ ধারা মেনে নিতে পারেনি।

আব্দুল মতিন,আল আহাদ, গোলাম মাহবুব প্রমুখ নেতা ১৪৪ ধারা অমান্য করার সিদ্ধান্ত অটুট থাকেন। অবশেষে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় (বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে) ছাত্রদের সভা জনসমুদ্রে পরিনত হয়।ছোট ছোট দলে ছাত্ররা মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। ছাত্র ছাত্রীরা ‘ রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই ‘ স্লোগান দিয়ে মিছিল করতে থাকলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে সমবেত হয়ে গণপরিষদের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে আবুল বরকত,রফিকউদ্দিন আহমেদ, আব্দুল জব্বার ঘটনা স্থলে শহিদ হন। আব্দুল সালাম ঐ দিন গুলি বিদ্ধ হয়ে ৭ই এপ্রিল শহিদ হন। বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে পরদিন ২২ শে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। আবারও মিছিলের উপর পুলিশ ও মিলিটারি লাঠি, গুলি ও বেয়নেট ব্যবহার করে।এতে শফিউর রহমানসহ আরও কয়েকজন শহীদ হন এবং অনেকে গ্রেফতার হন। তারপরও ভাষা আন্দোলন অব্যাহত ছিল।১৯৫৬ সালের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়া হয়।

 

তাৎপর্য

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ইতিহাসে এক অনন্য সাধারণ ঘটনা। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে এটি ছিল বাঙালি জাতির প্রথম প্রতিবাদ ও বিদ্রোহ, বাঙালি জাতির প্রেরণা।১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালি জাতি পশ্চিম পাকিস্তানি সরকারের অবহেলা, বঞ্চনা,শোষনের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছিল। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অবমাননা বাঙালির মনকে প্রবল নাড়া দিয়েছিলো।তারা বুঝতে পেরেছিলো পাকিস্তানিদের হাতে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি কিছুই নিরাপদ নয়। এভাবেই বাঙালির মাঝে জাতীয়তাবাদের বীজ রোপিত হয়।

বাঙ্গালির জীবনে ভাষা আন্দোলন এর তাৎপর্য অনস্বীকার্য । ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতি রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা মর্যাদা রক্ষা করে বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য সাধারণ ঘটনা হিসেবে আমাদের ভাষা ও শহিদ দিবস আজ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে।১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বরের প্যারিসে UNESCO অধিবেশনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

 

ফোকাস রাইটিং এর লেখাগুলো মাঝে মাঝে আপডেট এর প্রয়োজন পড়ে, বিশেষ করে ডেটাগুলো আপডেট এর প্রয়োজন হলে নিজে নিজে করে নিবেন।

 

 

Visit: https://www.examserious.com

Like our facebook page: Exam Serious

 

সাধারণত, আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে সরকারি, বেসরকারি, এনজিও ও ব্যাংকিং সেক্টরের বিভিন্ন  চাকুরির বিজ্ঞপ্তি এবং নিয়োগের পরীক্ষার ফলাফল পোস্ট করে থাকি। পাশাপাশি আমরা চাকুরির পরিক্ষার প্রশ্নের সমাধান এবং অনান্য তথ্য পোস্ট করে থাকি। আমাদের লক্ষ্য চাকুরি সন্ধানীদের চাকুরি পেতে সাহায্য করা। আমরা বিশ্বাস করি, মুল্যবান তথ্য চাকুরি পেতে সহায়তা করে। আমাদের ওয়েবসাইটে পোস্টকৃত চাকুরির বিজ্ঞপ্তিগুলো চাকুরিজীবি ও বেকার উভয়দেরকে সাহায্য করবে। প্রতিদিনের আপডেটের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন।

Md. Rashedul Islam

I'm an enthusiastic writer presently working as a government employee (BCS). Had my Graduate and Post Graduate Degrees from Dhaka University and gathered considerable experience in job market analyses and content writing especially both in Govt. and Private job sectors.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!